রাষ্ট্রের মৌলিক স্বার্থ রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে
- আপলোড সময় : ১৭-০৫-২০২৫ ১০:১৪:৫৯ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৭-০৫-২০২৫ ১০:১৪:৫৯ পূর্বাহ্ন

সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে যেভাবে পরিকল্পিতভাবে মানুষ ঠেলে (পুশ ইন) দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে, তা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক এবং রাষ্ট্রীয় স্বার্থের পরিপন্থী। আগে এমন ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্নভাবে দেখা গেলেও এখন যেভাবে এটি ধারাবাহিক ও সংগঠিত রূপে ঘটছে, তাতে একে আর ‘অনুপ্রবেশ’ বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এটি ভারতের একটি সুপরিকল্পিত কৌশলের অংশ বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
ভারতের আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা প্রভৃতি রাজ্যে এনআরসি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে যে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংকট তৈরি হয়েছে, তার বোঝা বাংলাদেশকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা বহু আগেই শুরু হয়েছে। এসব রাজ্যের অভ্যন্তরীণ চাপ হালকা করতে এবং রাজনৈতিক দায় এড়াতে ভারতের পক্ষ থেকে কিছু নিরীহ ও পরিচয়হীন মানুষকে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ তকমা দিয়ে জোরপূর্বক সীমান্তে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, এদের ভাষা, উচ্চারণ এমনকি সামাজিক যোগাযোগেও বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো মিল নেই।
এমন আচরণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পরিপন্থী এবং কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন। পাশাপাশি, এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি ও সীমান্ত নিরাপত্তা নীতিরও সু¯পষ্ট অবমাননা।
এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের উচিত কেবল মানবিকতা নয়, কূটনৈতিক দৃঢ়তা দেখানো। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় ফোরামগুলোকে সক্রিয় করে ভারতকে এ বিষয়ে কঠোর বার্তা দেওয়া দরকার। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলেও বিষয়টি সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণসহ তুলে ধরা জরুরি। কেবল শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ বা আলোচনার আশ্বাস দিয়ে এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়, প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় অবস্থান পরিষ্কারভাবে তুলে ধরা।
সীমান্তের কাঁটাতার শুধু ভৌগোলিক সীমারেখা নয়, এটি একটি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদার প্রতীক। আমাদের সীমান্ত যেন অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দায়মুক্তির ডা¤িপং গ্রাউন্ডে পরিণত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে এখনই। এই লক্ষ্যে সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী বিজিবি-সহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে আরও তৎপর ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।
বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র। তার সীমান্তরক্ষা, জনমিতিক ভারসাম্য ও সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষার দায় কোনোভাবেই অবহেলার জায়গা নয়। রাষ্ট্রের এই মৌলিক স্বার্থ রক্ষায় সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলের এখনই কার্যকর, সুসংহত এবং কঠোর অবস্থান নেওয়া প্রয়োজন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ